আওয়ামীলীগ শাসনামলের পুরো ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত ওসমান পরিবারের সকল সদস্যদের আস্থাভাজন বন্দরের ব্যাপক সমালোচিত সন্ত্রাসী মাহমুদুল হক শুভ এবার আওয়ামীলীগ সরকার পতনের সাথে সাথেই পল্টি দিয়ে নতুন গডফাদারের সন্ধানে মাঠে নেমেছে । এবার সেই কুখ্যাত অপরাধী মাহমুদুল হক শুভর পাশে দেখা গেছে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের ছেলে রিফাত কায়সারকে।
সরকতার পতনের মাত্র ৫ দিনের মধ্যেই ১০ আগষ্ট শনিবার সেই সন্ত্রাসী মাহমুদুল হক শুভ বন্দরের একটি অনুষ্ঠানে রিফাতের পাশেই বসা ছিলো।
এ নিয়ে সেখানে দেখা দিয়েছে নানা সমালোচনার ঝড় উৃঠেছে সর্বত্র ।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চিহ্নিত রাজাকার পরিবার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদের পরিবার। চেয়ারম্যান মাকসুদের দাদা, বাবা ও দুই চাচার বিরুদ্ধে রাজাকার হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার দিন পর্যন্ত অসংখ্য নিরীহ ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়েও তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, লুন্ঠনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়েও অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে রাজাকার পরিবারের উত্তরসূরীরা। তাদের কবল থেকে সাধারণ মানুষতো বটেই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদেরও রেহাই মিলছেনা। হত্যা, লুটতরাজ, ভূমিদস্যুতা, ধর্ষণসহ নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত পরিবারটি।
মাকসুদের বিরুদ্ধে যেমন অভিযোগ তেমনি অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধেও । ২০২৩ সালের ৩ জুন বন্দরে এক সাংবাদিকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠে শুভ ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে বন্দরে রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটর সাইকেলের কাগজপত্র চাওয়ায় মদ খেয়ে গভীর রাতে টহল ডিউটি পুলিশের ওপর হামলা চালায় শুভ ও তার বাহিনী। এ ঘটনায় কুড়িপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহমুদুল হাসান শুভকে (৩২) গ্রেপ্তারও করেছিল পুলিশ।
বন্দরে টোটাল ফ্যাশনে ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এক ইউপি সদস্যকে কারখানা থেকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর হত্যা চেষ্টার অভিযোগে রাজাকারের নাতি হিসেবে পরিচিত মুছাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মাকসুদের ছেলে মাহমুদুর হাসান শুভর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
কামতাল এলাকার এসএইচকে নামে এক গার্মেন্টে থেকে নিরাপত্তাকর্মীদের জিম্মি করে রাজাকারের নাতি হিসেবে পরিচিত চেয়ারম্যান মাকসুদের ছেলে মাসুদুর রহমান শুভর নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল গোডাউন থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার ঝুট মালামাল কাভার্ডভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়।
বন্দরে হুমকি-ধমকি দিয়ে ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া এবং স্বজনদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজাকারের পুত্র মাকসুদ হোসেনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ওই কিশোরী বন্দর থানায় এই মামলা করে। ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ ছাড়াও আমিনুল শেখ, ধর্ষক আলমগীর, তার ভাই আল আমিন, বাবা শুকুর আলী, মা নাসিমা, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ধর্ষক রকির ভাই আসলাম, জিয়াদ, শরিফ, আরিফ, রনি, অনিক, সুমন, নিলুফা, আবু তাহের ও শামীমকে মামলায় আসামি করা হয়। শবেবরাতের রাতে বন্দরের লাঙ্গলবন্দ চিড়ইপাড়া নন্দনকানন কলোনীতে গণধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী।
এমন ঘটনা ছাড়াও পেপার মিল ফ্যাক্টরী দখল করে সেখানে টর্চার সেল তৈরী করে সকল ধরণের অপরাধ সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধী মাহমুদুল হক শুভ ও তার পরিবারের সদস্যা। এই এলাকায় পুলিশ সাধারণ মানুষ ছাড়াও ধর্মপ্রাণ সনাতন ধর্মালম্বীদের উপর নির্যাতনের চিত্র ভয়াবহ। এমন অসংখ্য অপরাধের ঘটনায় দীর্ঘ ১৫ বছর ওসমান পরিবারের সকল সদস্যদের পাশাপাশি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীলকেও ম্যানেজ করে সকল অপরাধ করার্ সাহস করার এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর এবার বিএনপির নেতাদের ম্যানেজে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এই কুখ্যাত অপরাধী মাকসৃুদ ও তার পরিবারের সদস্যরা । এরই ধারাবাহিকতায় এখনো পর্যন্ত স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের পরিবারকে ম্যানেজ করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে কুখ্যাত এই পরিবারটি ।ৎ
এমন ঘটনায় বন্দর এলাকার অনেকেই বলেন, “এতোদিন এই বন্দরের এই কুখ্যাত মাকসুদ – শুভ পরিবারের অলিখিত বাবা ছিলো ওসমান পরিবারের সকল সদস্যরা এখন নতুন বাবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়াস পরিবারকে করায়ত্ব করার চেষ্টা চালাচ্ছে মাকসুদ ও তার পুত্র শুভ ।“
Discussion about this post