সোনারগাঁয়ে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই শনিবার বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স নামে বিদেশ থেকে আনা হয় কোটি কোটি টাকার মদ । সেই বিদেশী মদ আটকের ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হলেও আসামী হিসেবে গ্রেফতার কার হয় মো. নাজমুল হোসেন (২৩) ও সাইফুল ইসলামের (৩৪) তিন দিন করে এবং আব্দুল আহাদের (৩৫) কে । নেয়া হয় রিমান্ডে ।
আর এই ঘটনার মূল হোতা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুখ্যাত মাদক কারবারী আজিজুল ইসলাম তাৎক্ষনিকভাবে পলাতক থাকলেও ২০২২ সালের ৫ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) আজিজুল এবং তার ছেলে আশিক হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন । এরপর এরই মধ্যে চার সপ্তাহের জামিন নেয়ার দুই বছর অতিবাহিত হলেও কোন আসামীই আর নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার খবর পাওয়া যায় নাই।
এমন ঘটনার দুই বছর ব্যবধানে এবার আজ ৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে ২০ ফুট লম্বা একটি কনটেইনার ভর্তি বিদেশী মদের বড় চালান আটক করলে সেই নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ২০২২ সালের ২৩ জুলাইয়ের দুই কনটেইনার ভর্তি বিদেশী মদের চালান আটকের খবর আদালত নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণের কয়েকজন আইনজীবী সমালাচনায় মুখরিত হয়ে উঠে।
কয়েকজন আইনজীবী এ সময় বলেন, ওই মদের চালানের ঘটনা নারায়ণগঞ্জ আদালতে আসামীদের জামিন ও আসামীদের সুবিধা দিতে তৎসময়ের আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কলকাঠি নেড়ে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুখ্যাত মাদক কারবারী আজিজুল ইসলাম ও তার পুত্র মো. নাজমুল হোসেন (২৩) ও সাইফুল ইসলামের (৩৪) পক্ষে তৎপর ছিলো । সেই কুখ্যাত অপরাধী আজিজুল ইসলাম ও তার পুত্র মো. নাজমুল হোসেন (২৩) ও সাইফুল ইসলামের (৩৪) বীরের বেশে মুন্সীগঞ্জে ঘুরে বেড়ায় বলেও জোড় সমালোচনা রয়েছে।
আদালত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দূর্বলতার সুযোগে আবার এই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আদমজী ইপিজেড এর সুপ্রিম স্মার্ট এপারেলস লিমিটেড নামক পোষাক কারখানায় অন্তরালে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মদের ব্যবসা করে আসছিলো ।
জানা যায়, ‘সোডা অ্যাশ’ ঘোষণায় আনা কনটেইনারে মিলেছিলো ১৬ হাজার ৮২৪ লিটার বিদেশি মদ। এ চালানে প্রায় ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা চালানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে আটক হওয়া এই মদের বিষয়ে ২০২২ সালের (২৩ মার্চ) বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছিলেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা (এআইআর শাখা) মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।
তিনি জানান, ২০২২ সালের ১৩ মার্চ কনটেইনারটি দুবাই বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। কনটেইনারের আমদানিকারক বিসমিল্লাহ করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ঢাকার ১৪ বংশালের হাজি আবদুল্লাহ সরকার লেনে।
৪০ ফুট দৈর্ঘের ওই কনটেইনারে ২৭ হাজার কেজি সোডা অ্যাশ রয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছিল আমদানি কারক। বৃহস্পতিবার বিকেলে কায়িক পরীক্ষায় সোডা অ্যাশ ঘোষণায় আনা কনটেইনারে বিদেশি মদ থাকার বিষয়টি শনাক্ত হয়। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যে উক্ত চালানটির খালাস প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হয়। পরে কায়িক পরীক্ষায় মদ থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।’
তিনি জানান, গণনা শেষে এই কনটেইনারে ১৬ হাজার ৮২৪ লিটার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ পাওয়া যায়। যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং জড়িত রাজস্ব প্রায় ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কাস্টম হাউসের এআইআর টিমের সার্বক্ষণিক নজরদারী এবং একই সাথে বিভিন্ন যোগাযোগের ফলে বিপুল রাজস্ব ফাঁকির এই ঘটনা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ জুলাই বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর হয়ে অবৈধভাবে আসা দুটি কন্টেইনারে ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ রাজধাীতে প্রবেশ করছিল। পথে সোনারগাঁও টোল প্লাজায় র্যাব-১১ এর একটি দল সেই চালান জব্দ করে। সেখানে পাওয়া যায় ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ। এসবের মূল্য প্রায়া ৩৭ কোটি টাকা। শুল্কসহ প্রায় শত কোটি টাকার মদ আটকের ঘটনা সারাদেশে তোলপাড়ের সৃস্টি হলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় শত কোটি টাকার মদ চোরাই কারবারের মূল হোতা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুখ্যাত মাদক কারবারী আজিজুল ইসলাম। সেই আজিজুর ইসলাম এয়ারপোর্টসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্তাদের ম্রানেজ করেন দেশে ফিরে উচ্চ আদালত থেকে গত ৪ আগষ্ট চার সপ্তাহের জামিন নিয়ে এখনো রয়েছে অধরা ।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর আবার ১৬ হাজার ৮২৪ লিটার বিদেশি মদ আটক হয়েছে বিসমিল্লাহ করপোরেশন নামের এক প্রতিষ্ঠানের নিষিদ্ধ পন্য। এমন মদ আটকের পর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে উপস্থিত অনেকেই বলেন, প্রতারণা কত প্রকার ও কি কি ? তার জ্বলন্ত উদহারণ এই মদ কারবারীরা। ২৩ জুলাই বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর হয়ে অবৈধভাবে আসা দুটি কন্টেইনারে ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদের মূল হোতা হচ্ছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুখ্যাত মাদক কারবারী আজিজুল ইসলাম । এই আজিজুলের ফিরিস্তি ঘাটলে কতটা প্রতারক তা আর প্রকাশের অপেক্সা রাখে না । আর এবার ২৩ মার্চ আটক হওয়া ১৬ হাজার ৮২৪ লিটার বিদেশি মদের মূল হোতা বিসমিল্লাহ করপোরেশন । ধর্মীয় লেবাসে মদের কারবার কেউ কি সহজেই বিস্বাস করতে পারবে।
“মদের ব্যবসার সাথে যুক্ত এই চক্র অত্যান্ত ভয়ংকর । এরা আইন মানে না। এই অপরাধীদের নেপথ্যে রয়েছে রাঘববোয়াল।”এমন মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অনেকেই ।
Discussion about this post