চ্যালেঞ্জের মুখে ‘ওসমান সাম্রাজ্য’ এমন সংবাদ প্রকাশের ৫ বছর পর দুরন্ত প্রতাপশালী ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন কেউ চিন্তাই করতে পারে নাই । রীতিমতো বিগত সময়ের মতো পালিয়ে গেলো গডফাদার শামীম ওসমান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
শামীম পুত্র অয়ন ওসমান, শালক কুখ্যাত মাদক কারবারী তানভীর আহমেদ টিটু, বিয়াই লাভলুসহ সকল অপরাধীরা যেন উবে যায় হাওয়ার মতো।
সেই প্রতিবেদন উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জের অনেকেই বলেছেন, ওসমান পরিবারের সেই সাম্রাজ্য আর টিকিয়ে রাখতে পারলো না। তবে সেই সাম্রাজ্য ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগের বিশাল সম্পদ রক্ষায় পলাতক থেকেই ওসমান পরিবারের সকলেই বিএনপির জেলা পর্যায়ের শীর্ষ বিশ্বস্ত কয়েকজন নেতাকে ম্যানেজ করে তাদের সেই সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ করেই যাচ্ছে।
সাথে ওসমান পরিবারের সকল সদস্য ছাড়াও চেলা চামচারা এখনো আশাবাদী অচিরেই তারা ফিরে এসে আবারো সেই সাম্রাজ্য দখলে নিবেন । এরই চিন্তাভাবনা থেকে ওসমান পরিবারের নিয়ন্ত্রিত আইটি সেক্টরের অনেকেই কাজ করেই যাচ্ছে।
দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে কি না করেছেন তারা (ওসমান পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও চেলা চামচারা)।
শামীম ওসমানের অসংখ্য গ্রুপ, সেলিম ওসমানের অসংখ্য গ্রুপ, আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমান, একেকজন কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, বিশেষ পেশার নামধারী দালালদের নগ্ন কর্মকাণ্ড আতংকিত করে রাখতো পুরো নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
উল্লেখিত অপরাধীরা একদিকে নিজেরা টর্চার সেলে প্রতিপক্ষদের ধরে এনে নির্যাতনের মাত্রাও ছিলো ভিন্ন। ওসমান পরিবারের অত্যাচার নির্যাতনের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য ই ছিলো তাদের কেবা পুতুলের মতো। সার্কাসের পুতুল নাচের মতোই আংগুলের ইশারায় পুলিশ কে দিয়ে যা খুশি তা ই করা যেত । নাশকতা ও হেফাজতের কর্মী হত্যা মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জের সাবেক এসপি জাহেদুল আলম ফুয়াদ ওসমান পরিবারের সকল সদস্যদের কথায় কি করে উঠবস করেছেন তা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অনেকেই নানাভাবে টিপ্পনী কেটে নির্লজ্জতার উদাহরণ টেনেছেন।
অপরদিকে সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার এবং বিএনপি কর্মী শাওন হত্যা মামলার প্রধান আসামী গোলাম মোস্তফা রাসেল নারায়ণগঞ্জে যোগদান করেই ওসমান পরিবারের কি পরিমাণ চাটুকারিতা করেছেন তার প্রমাণ হচ্ছে শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর অস্ত্র নিয়ে শহরের একশন ও গুলি করার চিত্র। এমন কর্মকাণ্ডের পর পুলিশ উল্টো শামীম ওসমান, তানভীর টিটু, সেলিম ওসমান, অয়ন ওসমান, আজমেরী ওসমানসহ তাদের চেলা চামচাদের শেল্টার দিয়েছেন প্রকাশ্যেই । অস্ত্র হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া গুলি বর্ষন করাকালীন সময়ে পুলিশ ছিলো উল্টো সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপত্তার ভূমিকায়।
পুলিশের তৎকালীন সময়ে কর্মরত নির্ভরশীল সূত্র জানায়, ‘মূলতঃ শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান, তানভীর আহমেদ টিটু, রাজু, লাভলু, ভিকিসহ যত অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে সকল অস্ত্রের উৎস ছিলো পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। গোলাম মোস্তফা রাসেল পুলিশ বাহিনীর অস্ত্র ওসমান পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যদের হাতে তুলে দিয়ে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালাতে সব ধরণের সহায়তা করেছেন।’
ওসমান পরিবারের সকল অপরাধীরা পালিয়ে গেলেও এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল এখনো নারায়ণগঞ্জ থেকে অবৈধ টাকার কুমির হয়ে দেশেই রয়েছেন ৷
নির্ভরশীল ওই সূত্র জানায়, গোলাম মোস্তফা রাসেলের মুঠোফোনের কল রেকর্ড যাচাই করলেই বেড়িয়ে আসবে লোমহর্ষক তথ্য । যে কোনো পন্থায় দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে এই রাসেল। এমন তথ্যও দেন ওই কর্মকর্তা।
অপরদিকে বিশাল অর্থ নিয়ে পলাতক ওসমান পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি চেলা চামচা ও কথিত ছাত্র লীগ নেতা কা্ওসার, রনি, রাফেল প্রধান, হাবিবুর রহমান রিয়াদসহ আরো অসংখ্য অপরাধীরা কি পরিমাণ অপকর্ম চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জে যার বিস্তর প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। এমন কুখ্যাত অপরাধীদের হতে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ছাড়াও অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল অনুমোদন দিয়ে অনাপত্তি দেয়।
মূলতঃ এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল ই ছিলো ওসমান পরিবারের মূল প্রশাসনিক শক্তি। যার স্বচ্ছ তদন্ত করার দাবী উঠেছে নগরীতে।
Discussion about this post