আড়াইহাজার প্রতিনিধি
আড়াইহাজারের চার যুবককে অষ্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে শ্রীলংকায় টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপন হিসেবে আদায় করা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা। মুক্তিপন দিয়ে দেশে ফিরে আসার পর প্রতারক দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী একজনের পিতা।
কিন্তু ধূর্ত প্রতারক চক্র রয়েছে পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অপরাপর ভিকটিমেরা হচ্ছেন, একই এলাকার কাউসারের ছেলে হানিফ, স্বপনের ছেলে আঃ আহাদ এবং শামীমের ছেলে সাকিব।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, উপজেলার পাঁচরুখী এলাকার মোবারক হোসেন মোল্লার ছেলে হাসিবুল হোসাইনসহ আরো তিনজনকে অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার কথা বলে মিরপুর ১২ নং সেকশনের বি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৭৪ নম্বর প্লটের স্বপ্নখেয়া ভবনের ৭ম তলার বাসিন্দা মল্লিক রেজাউল হক সেলিম ও তার সহযোগিরা তাদের কাছ থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা নেয়।
পরে ২০২৩ সালের ২৬ মে হাসিবুল হোসাইনসহ আরো তিনজনকে অষ্ট্রেলিয়া পাঠানের কথা বলে বাড়ী থেকে নিয়ে যায়।
প্রতারক চক্র ভিকটিমদেরকে ভারতের চেন্নাই নিয়ে গিয়ে টর্চার সেলে আটকে রেখে ভিকটিমদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপন আদায় করে। পরে তাদেরকে আবার চেন্নাই থেকে অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীলংকায়। সেখানে নিয়ে আবার তাদেরকে রাখা হয় প্রতারক চক্রের নির্ধারিত টর্চার সেলে।
সেখানে দ্বিতীয় দফায় ভিকটিমদেরকে আটকে রেখে দৈহিক নির্যাতন করে ভিকটিমদের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপন আদায় করা হয়। পরে মুক্তিপন পাওয়ার পর ভিকটিমদেরকে ছেড়ে দিলে শ্রীলংকার পুলিশের মাধ্যমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। ভিকটিমেরা দেশে আসার পর মামলার বাদী ভিকটিম হাসিবুল হোসাইনের পিতা মোবারক হোসেন সর্বশেষ গত ৩ মে মামলার ৬ নং বিবাদী ইকবালের ভুলতা গাউছিয়া এলাকার বাড়ীতে এক সমঝোতা বৈঠক বসেন। বৈঠকে প্রতারকচক্র মোবারক হোসেনকে চরম অপমান অপদস্ত ও হুমকী ধমকী প্রদান করে। ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ দিবেনা বলে জানায়।
এ বিষয়ে মোবারক হোসেন বাদী হয়ে বিজ্ঞ মানবপাচার ট্রাইবুনাল, নারায়ণগঞ্জ এ চলতি বছরের মে মাসের ১৬ তারিখে মল্লিক রেজাউল হক সেলিম, তার স্ত্রী বিউটি এবং মেয়ে সূিুচসহ যাদের একাউন্টের মাধ্যমে টাকা দেয়া হয়েছে তাদেরকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেনযা আদালতের নির্দেশে আড়াইহাজার থানায় রেকর্ড করা হয়।
পিটিশন মোকদ্দমা নং- ২৫৪/২৪। কিন্তু মামলা হওয়ার পর প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ প্রধান আসামী মল্লিক রেজাউল হক সেলিমকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলার বাদী মোবারক হোসেন জানান, মামলাটির তদন্তের অগ্রগতির ক্ষেত্রে পুলিশ গাফিলতি করছে। তারা আসামী গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও তেমন তৎপরতা দেখাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে মামলার দতন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার এস আই রিপন জানান, মামলা গ্রহণের পর একজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। প্রধান আসামীসহ বাকী আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া মামলাটি সিআইডির সিডিউলভুক্ত হওয়ায় এর তদন্তভার সিআইডিতে হস্তান্তরের পক্রিয়া চলছে।









Discussion about this post