নারায়ণগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামীলীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে সাধারন শিক্ষার্থীদের গুলি বর্ষনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।যা ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের নেতৃত্বে তার ছেলে অয়ন ওসমান এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক দীলিপ মন্ডল সরাসরি সাধারন শিক্ষার্থীদের উপর এ হামলার নেতৃত্ব প্রদান করেন।
ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের তকমা ছাড়াও দীলিপ মন্ডল একটি বেসরকারী টিভি চ্যানলেসহ একটি জাতীয় দৈনিকে নারায়ণগহ্জ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সে সাথে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য বলেও জানা গেছে।
আওয়ামীলীগ নেতা দীলিপ মন্ডল সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের বিশ্বস্থ একটি সহচর ছিলেন। এমনকি যে সকল গণমাধ্যমকর্মী ওসমান পরিবারের অপকর্ম নিয়ে সংবাদ করতেন তাদের তালিকা এ দীলিপ মন্ডলের হাত ধরেই করা হত। একই সাথে বিগত সময়ে ওই গণমাধ্যমকর্মীদের শায়েস্তা করতে ওসমান পরিবারের হয়ে নানা অপকর্ম করার অভিযোগও রয়েছে এই দিলীপ মন্ডলের বিরুদ্ধে ।
এদিকে, আন্দোলন চলাকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি বর্ষনের ভিডিওটি গণমাধ্যম প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান তার ছেলে অয়ন ওসমান এবং সাংবাদিক নামধারী সন্ত্রাসী দীলিপ মন্ডলের গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর পরই সাধারন শিক্ষার্থীদের গুলি বর্ষনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
তবে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দেশে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারনে অভিযুক্ত সাংসদ শামীম ওসমান এবং তার পুত্র অয়ন ওসমানের বক্তব্য না নিতে পারলেও অন্যতম অভিযুক্ত দীলিপ মন্ডলের মুঠোফোন ০১৭১২….৭৩০ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ফোন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ রাখেন।
সাধারন শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করার সাথে জড়িত অন্যতম অভিুযুক্ত সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের অন্যতন ঘনিষ্ট সহচর নানা অপরাধের হোতা দীলিপ মন্ডলকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাধারন শিক্ষার্থীদের অনেকেই । অন্যথায় নারায়নগঞ্জের সর্বত্র আন্দোলনের হুমকি দেন তারা।
সাধারন শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন ছাত্রের রক্তও বৃথা যেতে দিব না। ছাত্রদের উপর অত্যাধুনিক পিস্তল দিয়ে গুলি করার ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদেরকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সাধারন ছাত্ররা।
এমন ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, “আমার সহকর্মী কি কর যে বক্তব্য দেই । তারপরেও বলি অপরাধী যে ই হোক তাকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। এই দিলীপ মন্ডল সাংবাদিকতা পেশায় কাজ করার আগে চন্দন শীলের বাড়িতে টিউশনি করতেন । এরপর শামীম ওসমানের হাত ধরে প্রভাবশালী দুটি গণমাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পায়। এরপর এই দিলীপ মন্ডল ‘ধরাকে সরাজ্ঞান‘ মনে করে নারায়ণগঞ্জ ও ফতুল্লায় বিশাল অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা করতেন বলে অভিখযোগ রয়েছে। একই সাাথে ফতুল্লা থানায় ওসির কক্ষে বসে ওসমান পরিবার বিরোধী সাংবাদিকদের নামে অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগও রয়েছে।”
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে প্রেসক্লাবের অপর এক সদস্য ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের মুঠোফোনের আলোচনাকালে বলেন, “দিলীপ মন্ডল মূলতঃ ওসমান পরিবারের রাজনীতি করেই এই অবস্থানে এসেছেন। এরপর যা করার তা ই করেছেন। কখনো শামীম ওসমান কখনো অয়ন ওসমান আবার কখনো কাজল ওসমানকে ব্যবহার করতেন নিজের স্বার্থ হাসিল করতেন। তার ফেসবুকের ছবি দেখিয়েই সাধারণ মানুষকে ভয় ভীতি দেখাতেন। এখন তার ফেসবুকে কোন ছবি নাই ওসমান পরিবারের কারোর ই। তার ফেসবুক ও তার মুঠোফোনের সকল কল রেকর্ড যাচই করলেই বেড়িয়ে আসবে দিলীপ মন্ডলের কর্মকান্ডের সকল তথ্য। গণমাধ্যমের স্বচ্ছতার লক্ষ্যে এই একজন দিলীপ মন্ডলের সকল তথ্য উদঘাটন করা জরুরী বলে মনে করেন প্রেসক্লাবের অনেকেই । তাইলেই আগামীতে এই মহৎ পেশাকে কেউ কলুষিত করার সাহস করবে না।স্বচ্ছতা আসবে গণমাধ্যমের।“
Discussion about this post