‘মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান সবসময় শামীম ওসমানের প্রেসক্রিপশনে কাজ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের গডফাদার শামীম ওসমানের ছোট ভাই বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন। এমনকি মাওলানা আব্দুল আউয়াল সাহেবকেও সে হেফাজতের মধ্যে কোনঠাসা করে রাখতো। একই সাথে ডিআইটি মসজিদের কতৃত্ব নিতে নানা ভাবে অপচেষ্টা চালাতো ফেরদাউসুর রহমান। মুখে মুখে তিনি ধর্মীয় কথা বলে সকলকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলেও ভিতরে তার ভিন্ন কর্মকান্ড চরিতার্থ করতে সব সময় কৌশলে চলাফেরা করতেন। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিজের ভোল পাল্টে আউয়াল হুজুরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা শুরু করেছেন ফেরদৌস। আমরা ফেরদৌসসহ যেসব নেতা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিল তাদের কমিটিতে চাই না। আমরা দালালমুক্ত স্বচ্ছ কমিটি চাই। দালালদেরকে কমিটিতে রাখা হলে তা মানা হবে না।’
এভাবেই উল্লেখিত মন্তব্য করে হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর কমিটিতে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান শামীম ওসমান ঘনিষ্ঠজন উল্লেখ করে এমন নেতাদের আর দেখতে চান না বলে সংগঠনটির অধিকাংশ নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়ালের দেখা করে সংগঠনটির অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী ।
এই সময় তারা মাওলানা আব্দুল আউয়ালের কাছে তাদের দাবিগুলো জানান। নেতা-কর্মীরা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানসহ শামীম ওসমান এবং আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের আগামী কমিটিতে দেখতে চান না বলে জানান।
বৈঠকে থাকা একাধিক হেফাজতে ইসলামের নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, আলোচনায় মহানগরের বিভিন্ন থানার অন্তত ৮০ জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীরের কাছে তাদের দাবির বিষয়গুলো তুলে ধরেন। এই সময় মাওলানা আব্দুল আউয়াল এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কথা বলবেন বলে তার সাথে দেখা করা নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করেন।
এই বিষয়ে মাওলানা আব্দুল আউয়ালের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এদিকে, স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের মহানগর কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান এই কমিটির সভাপতি ছিলেন।
তবে যোগাযোগ করা হলে কমিটি স্থগিত করার বিষয়টি অস্বীকার করেন ফেরদাউসুর রহমান।
তাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমানের সাথে আমার যে সখ্যতা, সেইটা কখনও হেফাজতের ব্যানারে ছিল না। উনি আমার মাহফিলের প্রোগ্রামে গেছেন প্রায় সময়। সেখানে গিয়ে আমাকে ছোটভাই বলে রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি করেছেন তিনি। তার সাথে সখ্যতা লিয়াজুর ছিল। অরাজনৈতিক দলের সাথে লিয়াজু থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমি কখনও দালালি করি নাই। আমি রাজপথে থেকে আমার সংগঠনের ভূমিকা পালন করেছি।
‘এক্ষেত্রে যারা পদত্যাগ চান তাহলে তারা চাইতেই পারেন। এইটাও সংগঠনের হিসাব। সংগঠনের সিনিয়র নেতারাই সিদ্ধান্ত নেবেন’, যোগ করেন তিনি।
এদিকে, আগামীকাল শুক্রবার হেফাজতে ইসলাম মহানগর শাখার ব্যানারে একটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সেটি স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
Discussion about this post