এবার দৃঢ়তার সাথে প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, “অনেক সাংবাদিক স্বৈরাচারী সরকারের দোসর ছিল ! আমাদের কাছে প্রমাণ আছে কিছু কিছু সাংবাদিক আমাদের দলের নেতাদের নাম এফআইআর লিখে দিয়েছে। অনেক সাংবাদিক আমাদের লোকজনদেরকে ডিবির সাথে গিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। সেগুলো আমরা ভুলে যাইনি।”
এভাবেই দৃঢ়তার সাথে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় প্রেসক্লাব ভবনের সিনেমন রেঁস্তোরায় নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের সাথে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, প্রেস ক্লাবের প্রতি আমাদের কেন অভিযোগ থাকবে না ? মামলা দিল অন্য কেউ এবং আপনার প্রেসক্লাবের সদস্য দাঁড়িয়ে বিএনপির সভাপতির নাম যখন বললেন তখন গোটা বিএনপিকে আপনার সামনে এসে দাঁড় করিয়েছেন, আপনার প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। চিল কান নিয়ে পালিয়েছে বলে নিজের কান না খুঁজে চিলের পিছে দৌড়াবেন, আপনারা তো এই শ্রেণীর মানুষ না। মামলা হওয়ার পর আপনারা যদি অনুসন্ধান করে দেখতেন এই মামলার পেছনে কে আছে, তাহলে আপনাদের প্রতি আমাদের এই অভিযোগের বিষয়টি থাকতো না।
আপনারা সাংবাদিক । অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করে। খুঁজে বের করেন । ৫ তারিখের পর নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় বহু মামলা হয়েছে। আপনারা যদি মনে করেন এই মামলা কারা করছে সেটা বিএনপি জানে তাহলে এই ধারণা ভুল। যারা মামলা করছে তাদের পাশে যদি আমরা থাকতাম, সেই মামলা খাওয়ার পর তাদের জীবনের অর্ধেক শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এখন যে মামলাগুলো হচ্ছে সেগুলো কেমন মামলা হচ্ছে আপনারা জানেন।
স্থানীয় প্রত্রিকার প্রতি অভিযোগ করে গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় পত্রিকাগুলো যথেষ্ট ভালো সেবা দেয়। ৫ তারিখের পর কিছু খবরের কাগজে দেখা যায় কোন এক নেতাকর্মীর অনেক অপরাধের তথ্য তুলে ধরেছে, আবার অনেক পত্রিকায় তাকে ফেরেশতা তুল্য বানিয়ে দিয়েছে। এগুলোতে আমাদের মধ্যে বিরুপ ধারণা হবে না কেন ? তবে আমি এটা স্বীকার করি লোকাল পত্রিকার সাংবাদিক এবং প্রেসক্লাব এক না। তবে এই পত্রিকাগুলো আপনাদের মান সম্মান কতটুকু নষ্ট করেছে এটা একবারও ভেবে দেখেছেন ? আমরা আহ্বান জানাই এইগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। প্রয়োজনে আপনারা বসেন, কোন সাংবাদিক এই পেশার জন্য কতটুকু যোগ্য সেটা যাচাই-বাছাই করেন। সাংবাদিকতা হলো একটি আদর্শের পেশা, তবে পত্রিকায় যেটা প্রকাশ করা হচ্ছে সেটা একটি ব্যবসা। আমাদের দলের মধ্যেও যেমন ভালো খারাপ আছে, আপনাদের মধ্যেও কিছু ভালো খারাপ আছে। তাদের বাছাই করে শুধু ভালোদের নিয়ে একটি সংগঠন করা উচিত। ভালদের এই নারায়ণগঞ্জ কে ভালো রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং খারাপের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। নারায়ণগঞ্জে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, তবে প্রেস ক্লাবটি হচ্ছে সব থেকে সম্মানীয়। আমাদের প্রেসক্লাব যদি সম্মানিত হয়, তাহলে আমরাও গর্ব করে অন্যান্য জেলার প্রেসক্লাবের সাথে তুলনা করে কথা বলতে পারব। আবার আপনারাও চাইবেন কোন নেতা যেন গডফাদারের না হয় দেশ ছেড়ে না পালায়।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবনের সঞ্চালনায় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূইয়া, জেলা যুব দলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির উপস্থিতিতে গিয়াসউদ্দিন বলেন, আপনারা না জেনে আমাদের উপর দোষারোপ করবেন, এটাতো নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দদের কাছে বাঞ্ছনীয় না। আপনাদের আমরা সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। আপনারা অনেক নিউজ করেন, কিছু নিউজ আমার পক্ষেও থাকে বিপক্ষেও থাকে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে নিউজ করার পর, আমি কি কোন সাংবাদিককে ফোন দিয়েছিলাম? অথচ এমন সময় গেছে যখন স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে একটা কথাও আপনারা বলতে পারেন নি। সাংবাদিকদের ওপর মামলা হুমকি ও মারপিট করা হয়েছে। আমাদের দলের ভেতরেও তো সবাই ভালো আছে এমনটা নয়, তবে আমরা যখন দলের কোন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অপরাধের তথ্য পেয়েছি সাথে সাথে একশন নিয়েছি। অনেকের আমার কথা ভালো না লাগতে পারে কিন্তু আমার মনে যা আছে আমি সেটা খুলে বলতে চাই, আমি মুনাফিক না।
Discussion about this post